যেসব ভুলে ই-পাসপোর্ট পেতে দেরি হয় জানুন
পাসপোর্ট আবেদন করার পরে সেটি কবে পাব এই প্রশ্নটাই বেশি শোনা যায় , আবেদন করার নির্ধারিত ২১ দিন এর মধ্যে পাসপোর্ট পাওয়ার কথা থাকলেও তা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে না বেশ কিছু ভুলের কারণে। আর এই ভুলগুলো পূর্ব থেকেই সংশোধন করে নিলেই পাসপোর্ট ডেলিভারি পাওয়া যাবে অতি অল্প সময়ে।
আবেদনের পর সঠিক সময়ে পাসপোর্ট হাতে না পাওয়ার অভিযোগ অনেকেই করে থাকেন। সাধারণ আবেদনের ক্ষেত্রে ২১ কার্যদিবসের মধ্যে পাসপোর্ট হাতে পাওয়ার কথা, কিন্তু অনেক সময় দুই মাসের বেশি সময় পার হলেও সেই কাঙিক্ষত ‘বস্তু’ হাতে আসে না। আবার অনেকেই নির্ধারিত সময়ের পূর্বেই পাসপোর্ট ডেলিভারি পেয়ে যান। আর দেরি করে পাসপোর্ট পাওয়ার জন্য ভুল কার? আবেদনকারী নাকি কর্তৃপক্ষের? চলুন বিস্তারিত জানা যাক
নামের ক্ষেত্রে ভুল
একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির পাসপোর্ট আবেদনের ক্ষেত্রে এনআইডি বাধ্যতামূলক, আবার অনেকেই ২০ বছরের নিচে যারা যাদের এন আই ডি নেই তাদের জন্ম নিবন্ধন দিয়ে পাসপোর্ট আবেদন করতে হবে। এবং আবেদন করতে হবে ও তার এনআইডিতে অথবা জন্ম নিবন্ধনে থাকা তার নাম অনুযায়ী, এক্ষেত্রে এনআইডি কিংবা জন্ম নিবন্ধন তে থাকা নামের সাথে পাসপোর্ট আবেদনের নামের অমিল থাকলে পাসপোর্ট প্রাপ্তিতে বিলম্ব হতে পারে। এক্ষেত্রে পুনরায় পাসপোর্ট এর তথ্য সংশোধন করার ক্ষেত্রে আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে আবেদনটি প্রেরণ করা হয়, তখন অনলাইন স্ট্যাটাস Suspended দেখা যায়।
অনেকে নামের নামের সঙ্গে বিএসসি, পিএসসি, পিপিএম, এমডি ইত্যাদি টাইটেল যুক্ত করেন। তবে জাতীয় পরিচয়পত্রে এগুলো থাকে না। তাই এসব টাইটেল পাসপোর্টের আবেদনপত্রে উল্লেখ করলে নির্ধারিত সময়ে পাসপোর্ট ইস্যু করা সম্ভব হয় না। এসব টাইটেল বাদ দিয়ে আবার আবেদন করলে পাসপোর্ট পাওয়া যায়।
এক্ষেত্রে নিজের নাম, পিতামাতার নাম একই সূত্রে গাথা। আবার অনেকেই আবেদনের সময় গিভেন নেম এবং সারনেম বিষয়টা গুলিয়ে ফেলেন, অনেকের এনআইডিতে শুধুমাত্র একটি নাম থাকে, যাদের চারটি শব্দের নাম থাকে সেক্ষেত্রে তাদের প্রথম দুইটি Given Name এবং শেষের দুইটি Surname নেইম হিসেবে দেওয়া উচিত,
আবার যাদের এন আইডিটি শুধুমাত্র একটি শব্দের নাম রয়েছে তাদের পাসপোর্ট আবেদন করার ক্ষেত্রে এনআইডিটি সংশোধন করে নিতে হবে, কেননা দুই শব্দের নাম ছাড়া পাসপোর্ট ইস্যু হয় না।
এনআইডির সঙ্গে আবেদনপত্রের নাম-ঠিকানায় অমিল
অনেকের পাসপোর্ট আবেদন করার সময় তার nid অনুযায়ী ঠিকানা প্রদান করে না, পাসপোর্ট আবেদন করায় বর্তমান এবং স্থায়ী ঠিকানা দুটি প্রদান করতে হয়, যদি একজন ব্যক্তি আলাদা আলাদা জায়গায় থাকে তাহলে সে ক্ষেত্রে তিনি স্থায়ী ঠিকানা এবং বর্তমান ঠিকানা আলাদা জায়গায় দিতে পারবে,
তবে এনআইডিতে থাকা তার ঠিকানা পাসপোর্ট আবেদনে স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে এবং সঠিকভাবে। যদিও পাসপোর্ট আবেদনে এনআইডির কপি জমা দিতে হয় না কিন্তু পাসপোর্ট ইমিগ্রেশন সার্ভার এর সাথে এনআইডি সার্ভার সংযুক্ত তাই খুব সহজেই এটি যাচাই করা সম্ভব হয় কর্তৃপক্ষের ক্ষেত্রে। এক্ষেত্রে এন আই ডি এর সাথে পাসপোর্ট আবেদিত ঠিকানার গড়মিল হলে পাসপোর্ট ইস্যু হবে না।
পুলিশ ভেরিফিকেশন প্রতিবেদনে বিলম্ব
পাসপোর্ট আবেদনে বায়োমেট্রিক এনরোলমেন্ট প্রদান শেষে কর্তৃপক্ষ কর্তক আবেদন প্রাথমিকভাবে যাচাই বাছাই করা শেষে সেটি আবেদনকারীর দেওয়া ঠিকানা অনুযায়ী তার নিকটস্থ থানায় প্রেরণ করা হয় পুলিশ ভেরিফিকেশন করার জন্য।
অনেকেই স্থায়ী এবং অস্থায়ী ঠিকানা আলাদা আলাদা প্রদান করে থাকে এক্ষেত্রে দুটো জায়গায় আলাদাভাবে পুলিশ ভেরিফিকেশন প্রযোজ্য হয়।
পুলিশ ভেরিফিকেশন থাকাকালীন অবস্থায় নির্ধারিত থানার একজন এসআই আবেদনকারীর দেওয়া নাম্বারে ফোন করে স্থায়ী কিংবা অস্থায়ী ঠিকানার বিভিন্ন কাগজপত্র, এন আই ডি, পিতা মাতার এন আই ডি, নাগরিক সনদ, গ্যাস/পানি/বিদ্যুৎ বিল ইত্যাদি নিয়ে যেতে বলে।
এই সমস্ত ডকুমেন্ট যত তাড়াতাড়ি সম্ভব উক্ত কর্মকর্তার নিকট দাখিল করতে হয়, এবং উক্ত পুলিশ কর্মকর্তা আবেদনকারী বিভিন্ন ব্যাকগ্রাউন্ড যাচাই বাছাই করে তাকে ইতিবাচক কিংবা নেতিবাচক রিপোর্ট প্রদান করে নিকটস্থ SB/DSB অফিসে, যদি রিপোর্ট ইতিবাচক হয়ে থাকে তাহলে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই পাসপোর্ট চূড়ান্ত পর্যায়ে চলে যায়, এরপর সেটি ইস্যু হয়ে থাকে। আবার নেগেটিভ রিপোর্ট এর কারণে পাসপোর্ট আবেদন বাতিল।
তবে অনেকেই এই পুলিশ ভেরিফিকেশন ঝামেলায় ভুগে থাকেন, নির্ধারিত সময়ে কাগজপত্র দাখিল করা সত্ত্বেও পাসপোর্ট স্ট্যাটাস চেক করতে গেলে Pending For Police Verification দেখা যায়, যার অর্থ হল এখন পর্যন্ত আপনার পুলিশ ভেরিফিকেশন রিপোর্ট এসবি অফিসে জমা হয়নি, এক্ষেত্রে আপনি পুনরায় উক্ত পুলিশ কর্মকর্তাকে ফোন দিয়ে বিষয়টি অবগত করতে পারেন, তাছাড়া SB/DSB গিয়ে এই বিষয়ে বিভিন্ন অভিযোগ জানাতে পারেন। পাসপোর্ট পুলিশ ভেরিফিকেশনে কি কি করনীয় জানা না থাকলে জেনে নিন।
মনে রাখবেন পুলিশ ভেরিফিকেশন যত দেরিতে হবে আপনার পাসপোর্ট প্রাপ্তি তত দেরি হবে। অর্থাৎ যত দ্রুত সম্ভব পুলিশ ভেরিফিকেশন প্রতিবেদন SB/DSB অফিসে প্রেরণ করতে হবে এবং এটির কাজ সম্পূর্ণ এসআই করবেন।
পুলিশ ভেরিফিকেশন এর সময় উক্ত কর্মকর্তা অর্থ দাবী করলে করণীয় কি?
সব পুলিশ টাকা দাবী করেনা।নিয়ম মাফিক টাকা দাবী করার কোন প্রশ্ন থাকেনা৷ টাকা দাবি করলে রেঞ্জের পুলিশ সুপার এর কাছে বিষয়টি খোলাশা করতে পারেন। সু-বুদ্ধি হলো কিছু টাকা খরছ হলেও ভেরিফিকেশন টা দ্রুত করে নিন। ৯৫% মানুষের পুলিশ ভেরিফিকেশনে টাকা দাবী করে কর্মকর্তা, এটা স্বাভাবিক