ই পাসপোর্ট আবেদন বাতিল করার নিয়ম

পাসপোর্ট আবেদন করার পর যদি আবেদনে ভুল পরিলক্ষিত হয় তাহলে অবশ্যই উক্ত আবেদনটি বাতিল করা উচিত। ভুল তথ্য সহকারে আবেদন দাখিল করলে পাসপোর্টে সারাজীবন ভুল থেকে যাবে পরবর্তীতে সংশোধন করা ব্যতীত, এক্ষেত্রে দ্বৈত খরচ হতে পারে। তবে পাসপোর্ট আবেদনে ভুল হলে সেটি খুব সহজেই বাতিল করা সম্ভব এজন্য বিস্তারিত ই পাসপোর্ট আবেদন বাতিল করার নিয়ম জানতে হবে।

আবেদন বাতিল করার জন্য আবেদনকারীর একাউন্টের ড্যাশবোর্ড থেকে কোন অপশন খুঁজে পাওয়া যাবে না। তাই অনেকে হতাশ হয়ে ভাবে যে ভুল আবেদন করে ফেলেছি এখন কিভাবে এটি বাতিল করব!

এন আইডি কার্ড অনুযায়ী আবেদনের তথ্যে মিল না থাকলে পাসপোর্ট আবেদনটি কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সাসপেন্ড করা হয় কিংবা প্রাথমিকভাবেই পাসপোর্ট অফিস থেকে আবেদনটি ফেরত দেওয়া হয়, আর অনেকেই তো আবেদন ফি অনলাইন পেমেন্ট করে ফেলেন , পরবর্তীতে লক্ষ্য করেন যে তার পাসপোর্ট আবেদনে ভুল হয়েছে।

উল্লেখ্য তথ্য এই যে কোন পাসপোর্ট আবেদনের আবেদন ফি অনলাইন পেমেন্ট করলে সেই পাসপোর্ট আবেদনটি বাতিল করলে আবেদন ফি Refund কিংবা পুনরায় উত্তোলন সম্ভব হয় না। এজন্য অবশ্যই সব সময় পাসপোর্ট আবেদন ফি অফলাইন পেমেন্ট করা উচিত। এ চালান কিংবা ব্যাংক ড্রাফট।

পাসপোর্ট আবেদন বাতিল করার নিয়ম

ই পাসপোর্ট আবেদনে ভুল হলে সেটি বাতিল করার জন্য আবেদনকারীর আঞ্চলিক বা বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসে পাসপোর্ট উপ পরিচালক বা সহকারি- পরিচালক / AD এর নিকট পাসপোর্ট আবেদন বাতিল সংক্রান্ত একটি লিখিত দরখাস্ত দাখিল করতে হবে। আবেদন পত্রে আবেদনকারীর পরিচয়, ভুলের কারণ এবং ভুলের ধরন ও পাসপোর্ট আবেদন নম্বর উল্লেখ করতে হবে।

পাসপোর্ট আবেদন করা শেষে উক্ত আবেদনটি আবেদনকারী আবেদিত আঞ্চলিক বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসে জমা হয়, পরবর্তীতে আবেদনকারীর বিভিন্ন ডকুমেন্ট জমা হলে উক্ত আবেদনটি গৃহীত হয়, তা না হলে আবেদনটি শুধুমাত্র Submitted অবস্থায় থাকে, একটা নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষে অটোমেটিক আবেদনটি বাতিল হয় তবে সেটি দীর্ঘ দিন পরে।

কোনো রকম ভাবে একজন ব্যক্তির নামে একটি পাসপোর্ট আবেদন সম্পন্ন হয়ে গেলে সেটি স্ব-ইচ্ছায় আর বাতিল করা সম্ভব হয় না, এমনকি উক্ত ব্যক্তির নামে পুনরায় আরেকটি পাসপোর্ট আবেদন করা সম্ভব হয় না।

ই পাসপোর্ট আবেদন বাতিল করার দরখাস্ত লেখার পদ্ধতি

তারিখঃ ………………………….

সহকারী পরিচালক

বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস

খুলনা, বাংলাদেশ।

বিষয়: ই পাসপোর্ট আবেদন বাতিল প্রসঙ্গে দরখাস্ত

জনাব,

সবিনয় বিনীত নিবেদন এই যে আমি ………………… পিতাঃ …………………. মাতাঃ ……………………. , ঠিকানাঃ ……………………. । আমি গত ……../……./………. তারিখে আমার নিজের জন্য একটি ই পাসপোর্ট আবেদন করি যার অনলাইন রেজিস্ট্রেশন নাম্বার OID12345678। আবেদন শেষে আমি খেয়াল করি আমার পাসপোর্ট আবেদনে কিছু ভুল পরিলক্ষিত হয়েছে।

ভুলবশত আমার পাসপোর্ট আবেদনে আমার (নাম/ পিতা মাতার নাম/ ঠিকানা / জন্ম তারিখ/মোবাইল নম্বর/জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর/জন্ম নিবন্ধন নম্বর/অন্য কোন তথ্য) টাইপ মিসটেক হয়ে ভুল লেখা হয়। এমতাবস্থায় আমি আমার আবেদনটি বাতিল করে নতুন করে একটি আবেদন করতে চাই।

অতএব মহোদয়ের নিকট বিনীত অনুরোধ এই যে, উল্লিখিত সমস্যার কথা বিবেচনা করে আমার ই পাসপোর্ট আবেদনটি বাতিল করে নতুন আবেদন করার সুযোগ দিয়ে আমাকে বাধিত করিবেন।

নিবেদক,

আপনার নাম………

মোবাইল নাম্বার , ০১৭…………

আবেদন জমে দেয়ার নিয়ম

দরখাস্তটি লেখা শেষ হয়ে গেলে এটি প্রিন্ট করে আপনার পাসপোর্ট অফিসে চলে যাবেন, এবার সেখানে সহকারী পরিচালক এর সাথে যোগাযোগ করে তার নিকট দরখাস্তটি হস্তান্তর করবেন, এরপরে বাকি কাজ কর্মকর্তা করবে, সবকিছু ঠিক থাকলে পাসপোর্ট আবেদনটি এক থেকে দুই দিনের মধ্যে বাতিল কার্যকর হবে, পরবর্তীতে আপনি নতুন করে আপনার পাসপোর্ট একাউন্ট থেকে নতুন একটি পাসপোর্ট আবেদন করতে পারবেন।

আবেদন বাতিল ফি প্রসঙ্গ

অনেকেই ভাবেন যে পাসপোর্ট আবেদন বাতিল করলে হয়তোবা আমার করা আবেদন ফি বাতিল হয়ে যাবে, তবে একটা শর্ত রয়েছে আপনি যদি পাসপোর্ট আবেদন করার সময় আবেদন ফি অনলাইন পেমেন্ট ekpay বা MFS- Mobile Banking সিলেক্ট করে পরিশোধ করেন তাহলে আপনার আবেদন ফি অফেরত যোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবে।

তবে আবেদন করার সময় যদি আপনি অফলাইন পেমেন্ট ( Bank Draft/ A challan ) সিলেক্ট করে পাসপোর্ট ফি পরিশোধ করেন তাহলে উক্ত চালানের কপি নতুন আবেদনের সঙ্গে সংযুক্ত করে আবেদন দাখিল করলেই আপনার কাজ হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে ভয়ের কিছু নেই।

Similar Posts

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।