কিরগিজস্তান কাজের ভিসা আবেদন ও প্রসেসিং পদ্ধতি
কিরগিজস্তান প্রবেশ করতে হলে প্রথমেই ভিসা নিতে হবে। আর যদি কাজ করতে চান আপনাকে ওয়ার্ক পারমিট নিতে হবে। বেশ কয়েকদিন ধরে কিরগিজস্তান কাজের ভিসা সম্পর্কে ব্যাপক মানুষ কৌতুহলী হয়ে পড়েছেন। বাংলাদেশীদের জন্য কিরগিজস্তানের ভিসা সহজলভ্য কিনা এটি প্রথমেই জানতে হবে। এরপরে কিভাবে ভিসা আবেদন করব এবং ওয়ার্ক পারমিট দিয়ে কিরগিজস্তান প্রবেশ করব তার ব্যাপক নির্দেশনা জানার প্রয়োজন রয়েছে।
কিরগিজস্তান যাওয়ার পূর্বে অবশ্যই দৃষ্টি সম্পর্কে আপনাকে বিস্তারিত তথ্য জেনে নিতে হবে, উক্ত দেশে অন্যান্য বাঙালিরা রয়েছে কিনা এবং কাজের সুবিধা কি কি এবং কত টাকা খরচ হতে পারে এবং ওখানে কাজ করলে কত টাকা বেতন হতে পারে ইত্যাদি তথ্য পূর্বেই জেনে নেওয়া ভালো।
কিরগিজস্তান মধ্য এশিয়ার একটি দেশ, যার উত্তরে রয়েছে কাজাখস্তান, পশ্চিমে উজবেকিস্তান, দক্ষিণে তাজিকিস্তান এবং পূর্বে চীন রয়েছে। দেশটি পাহাড়ি অঞ্চলে ঘেরা, বিশেষ করে তিয়ান শান পর্বতশ্রেণী এর একটি বড় অংশ দখল করে আছে। কিরগিজস্তান এর রাজধানী এবং সবচেয়ে বড় শহর হচ্ছে বিশকেক।
ইতিহাসের প্রেক্ষাপটে, কিরগিজস্তান প্রাচীন সিল্ক রোডের অংশ ছিল, যা পূর্ব এবং পশ্চিমের মধ্যে বাণিজ্যিক সংযোগ তৈরি করেছিল। দেশটি ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে স্বাধীনতা লাভ করে এবং তারপর থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
এখানকার অধিকাংশ জনসংখ্যা কিরগিজ জাতিগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত, তবে রাশিয়ান, উজবেকসহ অন্যান্য সংখ্যালঘু গোষ্ঠীরও বাস রয়েছে। ইসলামের প্রভাব অধিক এবং কিরগিজ ও রাশিয়ান ভাষা সরকারি ভাষা হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
কিরগিজস্তান কেন যাবেন?
কিরগিজস্তানের জীবনযাত্রার ব্যয় তুলনামূলকভাবে কম। ফলে বিদেশি কর্মীদের জন্য এই দেশ ব্যাপক লাভজনক হতে পারে, বিশেষ করে যারা উচ্চ বেতনে কাজ করে অধিক পরিমাণ সঞ্চয় করতে চান। কিরগিজস্তান অর্থনৈতিকভাবে একটি উন্নয়নশীল দেশ , তবুও বিভিন্ন খাতে, যেমন পর্যটন, নির্মাণ এবং কৃষিতে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হচ্ছে। এই খাতগুলোতে দক্ষ কর্মীদের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। তাই প্রতিবছর কিরগিজস্তান বিদেশ থেকে দক্ষ কর্মী নিয়োগ দিয়ে থাকে।
আপনি যদি কাজে অভিজ্ঞ এবং দক্ষ হয়ে থাকেন তাহলে কিরগিজস্তান গিয়ে আপনার কর্মসংস্থান তৈরি করতে পারেন এবং মোটা অংকের টাকা রোজগার করতে পারেন। কিরগিজস্তানে বাংলাদেশের জন্য ভিসা প্রক্রিয়ার সহজলভ্যতা রয়েছে, যা আপনার কর্মসংস্থানের জন্য সুবিধাজনক হতে পারে।
শুধুমাত্র কাজের জন্যই নয় ভ্রমণের জন্য এই দেশ খুবই মনোমুগ্ধকর। ভ্রমণ ছাড়াও বেশ কয়েকটি রকমের ভিসা এই দেশটি দিয়ে থাকে যেমন
- ওয়ার্ক পারমিট ভিসা।
- ভ্রমণ ভিসা
- ব্যবসায়িক ভিসা
কিরগিজস্তান কাজের ভিসা – ওয়ার্ক পারমিট
কিরগিজস্তানে কাজ করার জন্য অবশ্যই স্টেট মাইগ্রেশন সার্ভিস দ্বারা জারি করা কিরগিজস্তানের ওয়ার্ক পারমিট থাকতে হবে । কাজের অনুমতির জন্য একজন নিয়োগকর্তা দ্বারা ওয়ার্ক পারমিট আবেদন করতে হবে। বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে সরকারি ভাবে কিরগিজস্তান কাজের ভিসা প্রদান করা হয় এবং কম খরচে। তবে দেশে বিদ্যমান বিভিন্ন বেসরকারি এজেন্সি এর মাধ্যমে উক্ত দেশের ভিসা আবেদন করতে হবে এবং এর পরে ওয়ার্ক পারমিট এর জন্য আবেদন করতে পারবেন।
এখানে নিয়োগকর্তা বলতে কিরগিজস্তানে বিদ্যমান যেকোনো কোম্পানি কিংবা ব্যক্তি বোঝায় যার কর্তৃক স্বাক্ষরিত আবেদনের মাধ্যমে ভিসা প্রসেসিং করা হবে।
ভিসার জন্য আবেদন করার পরে এবং অনুমোদিত হওয়ার পরে, আবেদনকারীর একটি ওয়ার্ক পারমিটের প্রয়োজন হবে। নিয়োগকর্তা কর্তৃক তাদের কর্মচারীর জন্য পারমিটের জন্য আবেদন করতে হবে। ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় এক বছর পর্যন্ত থাকার অনুমতি পাওয়া যাবে । এবং পরবর্তী যদি আপনি আরো থাকতে চান তাহলে ভিসাটি রিনিউ করতে হবে।
নিয়োগকর্তাকে অবশ্যই স্টেট মাইগ্রেশন সার্ভিসের সাথে আবেদন করতে হবে এবং আন্তঃবিভাগীয় অনুমতি কমিশনের সাথে সাক্ষাৎ করতে হবে ওয়ার্ক পারমিট অনুমোদনের জন্য, শ্রম কোটার উপর ভিত্তি করে এই আবেদনটি করা হয়ে থাকে। ওয়ার্ক পারমিট অনুমোদিত হলে, ফি প্রদানের পর পারমিট সরকারিভাবে জারি করা হবে।
কিরগিজস্তান কাজের ভিসা পাওয়ার যোগ্যতা
প্রথমে অনলাইন থেকে ভিসা আবেদন করতে হবে এবং সর্বশেষ আপডেট জানার জন্য কিরগিজস্তান ভিসা চেক করে দেখতে হবে ভিসার সর্বশেষ আপডেট। সরকারি ভাবে যেতে হলে অবশ্যই আপনাকে দক্ষ এবং অভিজ্ঞ ব্যক্তি বলে নিজেকে তুলে ধরতে হবে। এছাড়াও যে যেই প্রয়োজনীয়তা রয়েছে তা হল
- ভিসা আবেদন পত্র
- সর্বনিম্ন ৬ মাস মেয়াদী পাসপোর্ট
- পাসপোর্ট সাইজের ছবি
- এনআইডি বা জন্মসনদের ফটো কপি
- কাজের অভিজ্ঞতার সনদ
- শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ।
- ভ্রমণ বিমার ডকুমেন্ট।
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স
- মেডিকেল রিপোর্ট
কিরগিজস্তান কাজের ভিসা কত
কিরগিজস্তান কাজের ভিসা পাওয়ার জন্য আপনাকে ৫ থেকে ৭ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ করতে হতে পারে। এটি ডিপেন্ড করবে আপনার কাজের দক্ষতার উপর এবং আপনি যদি সরকারিভাবে আবেদন করে থাকেন তাহলে ২-৩ লক্ষ টাকার মধ্যে আপনি উক্ত দেশ প্রবেশ করতে পারবেন।